Ure Jai Nishipakhi লেখক : নাসরীন জাহান পৃষ্ঠা : 208 নয়নপুর কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলের নাম নয়, হাওর পার্শ্ববর্তী যে-কোনো একটি গ্রাম, যা ধর্মের কুসংস্কার, দোররার শাস্তি, প্রভাবশালী মানুষের নির্মম শোষণ আর জিন-পরিতে আচ্ছন্ন হয়ে আছে। মধ্যরাত। হাওরের পথ জ্যোৎস্নালোকিত। সেই পথ ধরেই নয়নপুরে এসে পৌঁছোয় ওসমান। তিরিশ বছর আগে সে এখান থেকে পালিয়ে, গিয়েছিল শহরে এক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র ক'রে। পূর্ণিমার জলে ভাসে মাঝির ছেলে কুতুবুদ্দিনের দেহ। শহরের কিছুই স্পর্শ করতে পারেনি ওসমানকে কারণ তার মন জুড়ে ছিল শুধুই নয়নপুর। হাওর, মাঠ গোরস্থান ধরে রাতের পর রাত হাঁটতে থাকে কাধ কুঁজো বুড়ি। রাক্ষুসে আঁধার তাকে ডাকে। হাওরের ঘাটে বেদে বহরের আখড়া। সেই আখড়ায় চন্দ্রাণীর বাস-জেদি, সাপের মতোই কনকনা। অন্ধকার জঙ্গলের গভীরে সে খোঁজে গর্ত, বিষাক্ত বিকটাকার সাপটির টুঁটি সে একদিন চেপে ধরবে, নাচাতে নাচাতে বহরের মধ্যে ঢুকিয়ে দেবে ভয়। গ্রামের প্রভাবশালী মানুষ মুন্না খাঁ ওসমানকে জায়গা দেয় নিজের বাড়িতে, কিন্তু মনে তার প্রশ্ন জাগে, কে এই ওসমান। কুঁজো বুড়ি বস্তাভরতি জিন পোষে, ওসমানকে সে বলে জন্মের সময়েই সে যখন মৃত্যুর কাছাকাছি চলে গিয়েছিল, তখন সেই তার বুকে পাখির পরাণ পুঁতে দেয়। ঝাঁক ঝাঁক শীতপাখি ওসমানের বুকের মধ্যে এসে বসে, তার আজন্মের সাথিরা কখনও চেনা। কখনও আবার ভয়ংকর অচেনা, আর সেইসব চন্দ্রালোকিত পাখিদের বহুবর্ণ ডানার ভাঁজে ভাঁজে আটকে যায় ওসমানের অন্ধকার চোখ। আকার (cm) : 14.4 (l) X 22 (b) X 2.1 (h) |