Godyo Sangraoho লেখক : বিকাশ বসু পৃষ্ঠা : 528 সাহিত্য বিষয়ে সারাজীবন ধরে নানাধরনের গদ্য লিখেছেন বিকাশ বসু নানা পত্রপত্রিকায়, বিশেষত সংবাদপত্রের রবিবাসরীয় পাতায়। সুতরাং, গদ্যগুলি পাণ্ডিত্যের ভারে নুয়ে পড়েনি, বরং সাহিত্যের প্রতি ভালধবাসার জন্ম দিয়েছে সেইসব মানুষজনদের মনে যাঁরা সাহিত্যপাঠ থেকে যথেষ্ট দূরেই থাকে। এ বড়ো কম কথা নয়। শুধুই বাংলা সাহিত্য নয়, বিশ্বসাহিত্যের নানা খবর ছড়িয়ে রয়েছে এইসব লেখায়। আমরা অনেকেই জানি দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর রবীন্দ্রনাথের গানগুলিকে সযত্নে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। যখনই কথা ও সুরে কোনো গান তৈরি হত, রবীন্দ্রনাথের মন চঞ্চল হয়ে উঠত, শান্তিনিকেতনের মাঠ দিয়ে চড়া রোদ উপেক্ষা করে রবীন্দ্রনাথ দ্রুত পায়ে পৌঁছোতেন দিনুর কাছে, ভুলে যাবার আগে দিনুকে তুলিয়ে দিতে হবে গান, দিনুর কাছে থাকলে সে গান আর হারাবে না। কিন্তু ক-জন জানেন যে দিনু ঠাকুরও কবিতা লিখেছিলেন এবং জীবদ্দশায় সেগুলি লুকিয়ে রেখেছিলেন লজ্জায় ও সংকোচে, রবীন্দ্রনাথের চোখে যাতে না পড়ে যায় ! ক-জন জানেন যে পৃথিবী বিখ্যাত নাট্যকার বার্নার্ড শ জীবনের শেষ পর্বে গ্রামে অশিক্ষিত মানুষদের মধ্যে বসবাস করেছিলেন যাঁরা তাঁর লেখা সেভাবে পড়েওনি। গ্রামের পোস্টঅফিসের মাস্টারমশাই তাঁকে বলেছিলেন, কষ্ট করে এসে তাঁর যা দরকার চিরকুটে লিখে যেন পাঠিয়ে দেন। শ জানতে পারেন চিরকুটে লেখা তাঁর সই বিক্রি করে গরিব পোস্টমাস্টার কিছু উপার্জন করেন। ক-জনই বা জানেন ফরমায়েশি লেখাও অনেক সময় অবিস্মরণীয় সৃষ্টি হয়ে ওঠে। এক বিবাহবাসরে অভিনীত হওয়ার জন্য শেকসপিয়র লিখেছিলেন ‘মিডসামার নাইট্স্ ড্রীম’। এরকম একটি বই পড়ে সাধারণ মানুষ যেমন সাহিত্যের অনেক কিছু জেনে ফেলেন, তেমনই লেখকের পাঠের ব্যাপকতা সাহিত্যের ছাত্রদের বিস্মিত করে। |