Jugacharja Shrishri Pranabananda লেখক : অর্ভিন ঘোষ পৃষ্ঠা : 224 দুর্গাপুজোর রাত গভীর হয়েছে। দেবীমণ্ডপ ফাঁকা। বছর সতেরোয় এক যুবকের চোখে ঘুম নেই। মূর্তির মধ্যে সত্যিই কি দেবী অধিষ্ঠিত? অস্ত্র হাতে ধেয়ে গেলেন। মূর্তিকে ভেঙে ফেলবেন তিনি। সত্যিই কি দেবী আত্মপ্রকাশ করবেন না তখনও? দেবীমূর্তির সামনে গিয়ে ধ্যানমগ্ন হলেন তিনি। এক তাল জ্যোতি মূর্তি থেকে বেড়িয়ে এসে তাঁকে ভেদ করে চলে গেল। উপলব্ধি হল মৃন্ময়ী মায়ের চিন্ময়ী রূপ। তারপর থেকে কতবারে বিশ্বপ্রকৃতির মধ্যে সেই চিন্ময়ীকে প্রত্যক্ষ করলেন তিনি। ১৮৯৬ সালে ফরিদপুরের বাজিতপুরে জন্ম এই যুবকের। এঁর হাতেই পরবর্তীকালে প্রতিষ্ঠিত হল ভারত সেবাশ্রম সংঘ। তখন অবশ্য তাঁর নাম স্বামী প্রণবানন্দ। ১৯১৯ সালের খুলনায় ঘূর্ণিবার্তার সময় ত্রাণকার্যে দুর্গতদের মধ্যে নেমে এলেন তিনি। আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় অর্থ সংগ্রহ করে তুলে দিলেন তাঁর হাতে। উদবৃত্ত অর্থে আশ্রম প্রতিষ্ঠা হল। তারপর থেকে তীর্থ সংস্কারে, বিপর্যয় মোকাবিলার, আধ্যাত্মিক সংস্কারের বিবিধ কাজে ছড়িয়ে পড়লেন তাঁর সংঘের শিষ্যরা। ক্রমে ক্রমে সারা বিশ্বজুড়ে প্রতিষ্ঠিত হল ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের শাখা। চুয়াল্লিশ বছরের এই দিব্যজীবন মানুষের যথার্থ পরিচয় এঁকে দিয়ে গেল আবহমানের বুকে। ক্ষয়িত সময়ের পাঁজরের ফাঁকে আজও বাঁচার কিছু রসদ রেখে যায় তাঁর সেই বাণী-‘প্রতীক্ষায় যে দৃঢ়, সংকল্পে যে অবিচলিত সকল সিদ্ধিই তাঁর করতলগত।’ |