kathabarta songroho
লেখক : সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়/ সংকলন ও সম্পাদনা : রফিক উল ইসলাম
পৃষ্ঠা : 608
১৯৬৪-র সেপ্টেম্বরে কলেজ স্ট্রিট-এর কফিহাউসে বসে সেই প্রথম মুখ খুললেন আইওয়া-ফেরত এক তরুণ কবি: ‘...আমেরিকান সাহিত্য শুধুমাত্র আমেরিকান সাহিত্যেই সুখী, সন্তুষ্ট। তাদের অনেকেই মনে করে, তাদের সাহিত্যে যা হচ্ছে তাই-ই সর্বশ্রেষ্ঠ। সত্যি কথা বলতে গেলে বাঙালির ছেলের মতো সর্বভুক আমি দেখিনি।...’ আর ২০১২-র এপ্রিলে, সেদিনের সেই তরুণ, বরেণ্য কবি ও কথাসাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় অন্যতম চলচ্চিত্র-ব্যক্তিত্ব শ্রীমতী অপর্ণা সেনের মুখোমুখি বসে জানালেন: ‘...একটা ঘটনার কথাই ভাবো না, ধরো, রাম আর সীতা তো ১৪ বছর একসঙ্গে বনে থেকেছেন, কিন্তু সে সময়ে তাদের কোনো সন্তান হয়নি। তারপর রাবণ সীতাকে হরণ করে নিয়ে গেলেন। এরপরই সীতা গর্ভবতী হন, যমজ পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। একবার ভেবে দেখো, ১৪ বছরেও যে স্বামী-স্ত্রীর সন্তান হয় না, সেখানে এই আকস্মিক সন্তানলাভ কেমন একটা বেমানান নয় কি?...’ পরিব্রাজকের মতন প্রায় সমগ্র বিশ্ব ভ্রমণকারী এই অকুতোভয় মানুষটিই তাঁর ব্যক্তিত্ব আর সৃষ্টিসম্ভার নিয়ে আমাদের আগ্রহের কেন্দ্রে বিরাজ করেছেন সুদীর্ঘকাল। প্রায় অর্ধশতাব্দী জুড়ে দেশ-বিদেশের অজস্র সাময়িকী কিংবা দৈনিকপত্রে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন মানুষজনের সঙ্গে তাঁর সরাসরি কথাবার্তায়, আকাশবাণী-দূরদর্শন কিংবা অন্যান্য নিবিড় আড্ডায়, গোলটেবিল বৈঠক কিংবা বিতর্কের তীব্র আসরে উদ্ভাসিত, পরোয়াহীন, যুক্তিনির্ভর আর সর্বভুক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে তন্নতন্ন করে খুঁজে দেখেছেন বিশিষ্ট কবি ও গবেষক রফিক উল ইসলাম। তিনি জানাচ্ছেন: ‘কথায়-কথায় জীবনের স্বাভাবিক, দারিদ্রমথিত আর রোমাঞ্চকর অধ্যায়গুলি যেমন, যাপনের বিস্তৃত অভিজ্ঞতা আর সাহিত্যদর্শন পরতে-পরতে মিলেমিশে তেমনভাবে এই প্রবাদপ্রতিম কবি এবং কথাসাহিত্যিকের এক পূর্ণাঙ্গ (‘অর্ধেক’ নয়) আত্মজীবনী উদ্ভাসিত করতে চেয়েছে। কখনো-সখনো তিনি নিজেই অবতীর্ণ প্রশ্নকর্তার ভূমিকায়। সেইসব কথাবার্তার রোমাঞ্চও কম নয়! সুদীর্ঘ সময়কালে অবিশ্রান্ত আর ভিন্নমুখী জেরার মুখেও তাঁর বিশ্বাসে চিরদিন অবিচল থাকা জেদি আর অভ্রান্ত, উন্মুখ আর বিতর্কিত সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর সম্পূর্ণ আত্মজীবনী নিয়েই ধরা পড়ে গেলেন অনন্য এই আকর গ্রন্থটিতে।
আকার (cm) : 22 (l) X 28 (b) X 4 (h)