কবিতা সমগ্র (দ্বিতীয় খণ্ড)

  • Sale
  • Regular price Rs. 700.00
Shipping calculated at checkout.


Kabita Samagra 2

লেখক : শামসুর রাহমান

পৃষ্ঠা : 384

কবি লেখেন কবিতা। সে কবিতায় গ্রন্থিত হয় কবির অন্তরে লালিত আবেগ, অনুভূতি, অভিজ্ঞতা। কবির কলম কখনও কখনও রূপ বদল করে তুলি হয়ে যায়, রং? সে তো জীবনের সাদায় কালোয় বিভিন্ন মাত্রায় মিশে আছে। কবি তাঁর তুলি ডুবিয়ে নেন সেইসব অদৃশ্য রঙের প্যালেটে। কবিতা আঁকা হয়। কবি আঁকেন– ‘এখন তো মেঘের অঢেল স্বাস্থ্য, রাঙা সূর্যোদয়’।পাঠক নির্মিমেষ চেয়ে থাকে কবিতার দিকে। কবিতা, নাকি ক্যানভাস? তারপর কবি এক লহমায় পাঠককে নিয়ে আসেন বাস্তব দুনিয়ার চৌমাথায়। ‘ভেলায় ভাসছে কত গলিত বেহুলা চতুর্দিকে’– পিতৃতান্ত্রিক মানবসমাজে মনসামঙ্গলের মলাট পেরিয়ে বেরিয়ে পড়েছে শত সহস্র বেহুলার দল। কবির কলম প্রতিবাদ জানায় বজ্রনির্ঘোষ কণ্ঠে। বিচলিত কবি। বিচলিত পাঠকমন। ‘আজকাল কী যে হচ্ছে, ঘুম গৃহস্থের প্রাণাধিক পুত্র, বাস্তুত্যাগী’। নিদ্রাহীনতায় ভুগতে থাকে সমাজ। কবি সমাহিত হন নিজের অতলে। ‘মনের গভীরে জোনাকি-অচেতন’ কবির সুনিপুণ জীবন সমীক্ষায় তাঁর একান্ত উপলব্ধি– ‘অথচ বাঁধতে গিয়ে সাঁকো/ আমি শুধু ব্যর্থ হয়ে যাই’। শুধু কি কবিই ব্যর্থ? নাকি পাঠকও? ‘পাথরে ঘষেও ঠোঁট পারি না ফোটাতে কোনো ফুল’ বুঝি পাঠকেরও মনে পড়ে নিজস্ব ব্যর্থতার কঠিন ইতিহাস। সভ্যতার কি ক্ষমতা সত্যিকে আড়াল করার? কবি তাই প্রশ্ন রাখেন– ‘কী করে লুকাবে বলো এত বেশি লাশ/ শোকার্ত মাটির নীচে, গহন নদীতে?’
বিমূর্ততা ছাড়া কবিতা অসম্পূর্ণ। ‘বুড়িগঙ্গা আকাশের চোখের তলায়/ আপন রূপালি বুক করে উন্মোচন’–কবিমানসে ধরা দেয় প্রকৃতির আদিম ভালোবাসা। রূপকল্পের আয়না দিয়ে তিনি দ্যাখেন– ‘চতুর্পার্শ্বে সূর্যমুখী, নতুন বাছুর, গয়লানি সাঁতরাচ্ছে’, কোথায় এত জল থইথই? নিজের নিজস্বতা জাগিয়ে রাখার প্রয়াসে লেখেন–‘আমার আপন দরজায় মাঝে-মধ্যে করাঘাত হওয়া চাই।’ প্রত্যাশার কাছে নত হয়ে হেরে যাওয়ার কথা তিনি লিখে যান– ‘একটি নিটোল স্বপ্ন তাকে কম্পোজ করতে দিয়ে দেখি,/ স্বপ্নের জায়গায় দিব্যি দুঃস্বপ্ন দিয়েছে বসিয়ে সে,’ আবার এক চিরন্তন সত্য থাবা পেতে বসে। কবি শিশুর সারল্যে জিজ্ঞাসা রাখেন–‘মানুষ সংগমকালে বিস্মৃতি লালন করে বুঝি’। তারপর আসে চিরাচরিত স্মৃতিযাপন–‘পাখির বাসার মতো কিছু স্মৃতি থাকে পড়ে ক্লিষ্ট অ্যাশট্রেতে’,কবির সঙ্গে সঙ্গে পাঠকও বুঝি ফিরতে চায় একদাআপন ‘ঘরে, পথে-ঘাটে, গোটে—বুঝিবা কাঁদছে একা আমারই শৈশব’।

আকার : 22.2 (h) × 14.1 (w) × 3 (d)