Tarasankar : Kaler Darpane
সংকলন ও সম্পাদনা : ধ্রুবকুমার মুখোপাধ্যায়
পৃষ্ঠা : ১০৮০
বঙ্কিমচন্দ্র-ত্রৈলোক্যনাথ-রবীন্দ্রনাথ পেরিয়ে বাংলা উপন্যাসে যে ভাষাবদল তার ভরকেন্দ্রে ছিল লেখালেখিতে গ্রামীণ সমাজচিত্র যোগ। বাংলা ভাষামানসে গ্রামসমাজ অভিষিক্ত হল এবং তার অন্তরাত্মা বিকশিত হল মূলত বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা সাহিত্যপ্রবেশে। গ্রামীণ মাটিতে জমিদারি প্রথার উচ্ছেদ, আধিয়া বর্গাচাষিদের সঙ্গে জোতদারদের অনুপ্রবেশ, সঙ্গে নব্য শিল্পপতিদের সম্পর্কগত সংঘাত, ভূমিবণ্টন ব্যবস্থায় নয়ামোড় বাংলা সাহিত্যকর্মে প্রতিভাত হল মূলত তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের আগমনে। তারাশঙ্কর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে দেশ- কাল-সমাজ-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য ও লোকসমাজকে সাহিত্যমুখ করে তুললেন। সত্য তবে সৃষ্টিতে একদিকে ধ্বংস বন্যায় জমি ভেসে যায়, জল সরে গিয়ে জেগে ওঠে নতুন জমি। মানুষ দখলে মেতে ওঠে। তারাশঙ্করের সাহিত্যে প্রতিষ্ঠা পায় সেই কালপ্রতিমা। সেই পরিবর্তন তারাশঙ্করের রচনায় রাঢ়বঙ্গের বিচিত্র জীবন সমাগত হল বাংলার পাঠকমানসে। রাগে- অনুরাগে, কামনা-বাসনার আরক্ত সংরাগে জীবনের যে বিচিত্র বিভঙ্গ রাঢ়ের দগ্ধ প্রান্তরে, হিজলবিলে, বসনের মদিরেক্ষণ মায়ায়, কালোশশীর কটাক্ষ ইক্ষণে ঝলসিত হয়ে ওঠে তাঁর রূপায়ণে। তারাশঙ্কর সুনিপুণ শিল্পী, সমাজ-আর্থ পরিবর্তনের সদর্থক রূপাঙ্কনেও তিনি তাৎপর্যবহ। তাঁর ধাত্রীদেবতা, কালি গণদেবতা, কবি, মন্বন্তর, আরোগ্যনিকেতন, সন্দীপন পাঠশালা, তামস তপস্যা, যোগভ্রষ্ট ইত্যাদি শুধু প্রতিভার বিচিত্র প্রকাশই নয়, তারাশঙ্করের ঔপন্যাসিক চরিত্রের দিকও উদ্ঘাটিত করে। এবং বিস্ময়ের এক আবহমণ্ডলে পাঠককে দাঁড় করিয়ে দেয় তাঁর বিচূর্ণ বিশ্বাসের গতিস্পন্দিত তরঙ্গময়তায়। জীবনের অপ্রতিরোধ্য শক্তির আবাহনে এবং প্রাচীনের বিসর্জনে তারাশঙ্কর ছিলেন এক তন্ময়শিল্পী। তারই সমকাল ও উত্তরকালের কলমে ধরা পড়েছেন তারাশঙ্কর : কালের দর্পণে। সংকলন ও সম্পাদনায় ধ্রুবকুমার মুখোপাধ্যায়।
আকার : 22 (h) x 14.5 (W) x 6.6 (d)