Gayatri Sandhya
লেখক : সেলিনা হোসেন
পৃষ্ঠা : 848
সালটা ১৯৪৭। উপমহাদেশের মানচিত্রে অসংখ্য রেখার অবস্থান পরিবর্তিত হচ্ছে। আলি আহমদ ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী পুষ্পিতা শত শত নীড়ভাঙা মানুষের মতোই পাড়ি জমায় নতুন দেশ ‘পূর্ব পাকিস্তান’-এ। শুরু হয় নতুন প্রাণের সঙ্গে নতুন জীবন। সময়ের এই পরিধি পূর্ববঙ্গের বাঙালি অধিবাসীর জীবনের দিকবলয়। একটি সূচনা থেকে অন্য সূচনায় প্রবেশের ক্রান্তিকাল। দেশান্তরে কারও কারও ভাগ্য ফেরে, কেউ কেউ প্রতিনিয়ত নিয়তির সঙ্গে যুঝতে থাকে। ইতিহাস বহরে বাড়ে, আর বাড়ে মানুষের অভিজ্ঞতা। সাক্ষী থাকে ভাগীরথী আর পদ্মা। পারিবারিক জীবনের বিলাবল শুনতে শুনতে আলিকে কান পাততে হয় রাজনীতির ধারাভাষ্যে। দেশের রাজনৈতিক পটভূমির দ্রুত বদলের সঙ্গে সঙ্গে তাকে সন্তান প্রতিপালন ও পরিবার লালনের গুরু দায়িত্ব পালন করতে হয়। চারপাশের কঠিন সময় পরিস্থিতিকে আরও প্রতিকূল করে তোলে। সাল ১৯৭১। মানচিত্র পুনরঙ্কিত হচ্ছে মাতৃভাষার জন্য শহিদ হওয়া অমর আত্মাদের পুণ্যে। বিশ্বের সামনে প্রতিভাত হল নতুন এক দেশ, বাংলাদেশ। কিন্তু স্বাধীনতার জন্য এই দীর্ঘ আটাশ বছরের যে লড়াই, তার প্রভাব কেমন ছিল আলি, পুষ্পিতা, প্রতীক, প্রদীপ্ত, মঞ্জুলিকার মতো সাধারণ মানুষের জীবনে? তাদের দৈনন্দিন যাপন কি পালটে গেল চিরতরে? ইতিহাসের সম্পদ বৃদ্ধি হলেও বাস্তবে ক্ষয় হল কাদের? রাজনৈতিক হিংসা কি রাঙিয়ে দিল পোয়াতি নদীর জল? নাকি তারা খুঁজে পেল বেঁচে থাকার নতুন মনোবল? ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারত দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে লাভ করেছিল স্বাধীনতা। ধোপে টেকেনি এ স্বাধীনতার আদর্শগত ভিত্তি। ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জয়ী হয়ে বাঙালি অর্জন করে একটি পতাকা, জাতীয় সংগীত এবং স্বাধীন ভূখণ্ড। এ জাতিকে স্বাধীনতার স্বপ্নে অনুপ্রাণিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৫ সালে তাঁর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে পট-পরিবর্তন হয় ইতিহাসের। শুরু হয় বাঙালির উলটো যাত্রা। দীর্ঘ আটাশ বছরের আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক পটভূমিতে রচিত হয়েছে এ উপন্যাস। এই সময়ের শিল্পিত শব্দরূপ সেলিনা হোসেনের সন্ধের গান 'গায়ত্রী সন্ধ্যা'র অখণ্ড ভারতীয় সংস্করণ।
আকার (cm) : 4.6 (l) X 14.6 (b) X 22.3 (h)