3 No Shalimar Gate লেখক : পরিতোষ চন্দ্র গুহ পৃষ্ঠা : 144 ঠিকানাগুলো হঠাৎ করেই বাসাবদল করে নেয়। কিন্তু পুরোনো বাসার থেকে মনগুলো কিছুতেই জায়গা বদল করতে চায় না। দেশ হারিয়ে,দিশা হারিয়ে একদল মানুষ নিরুপায় হয়ে টেনে হিচড়ে তুমুল অনিচ্ছা সত্ত্বেও জীবনটাকে কাঁটাতারের এপারে এনে ফেলে। পথে হারিয়ে যায় আব্রু, ফুরিয়ে যায় নিষ্কলুষ স্বপ্নগুলি। তবু বাঁচা বড়ো বালাই বলেই হারতে হারতেও আপ্রাণ লড়ে যেতে হয়। লড়তে হয় ভাগের বসতের ঘরে ও বাইরে। তারও পরে একমন হতে না পারা মানুষগুলো বহুদিনের বঞ্চনা থেকে উঠে আসা বিনোদনের মতন করে কেচ্ছার কালো ছিটে ছুড়ে মারে পরস্পরের দিকে। এসব নিয়েই চলতে থাকে অশ্রু, বিশ্বেশ্বর কিংবা বদ্রী নেহারের মতো অসংখ্য সংসার। মাঝে মাঝে পতর্কীর হাসিটা যেন বিপুল হাহাকারকে ঢাকতে গিয়ে হঠাৎ করেই সবকিছুকে উদোম করে দিয়ে যায়। ১৯৪৭-এ দেশভাগের রেশ নিয়ে এমনই অসংখ্য যাপন জমা হয়েছে কলকাতার কার্নিশ ঘেঁষে। শহর শহরতলি জুড়ে মাটি মাখা ছিন্ন শিকড়ের প্রচ্ছায়ারা ভিড় জমিয়েছে। বাঁচাটাকে সার্থক করতে গিয়ে পিঠ ঠেকে গেছে দেয়ালে। জীবনের হুলুস্থুলুর ফাঁক দিয়ে হারিয়ে গেছে বিন্নি-বোয়ার মতো অনেক আধফোটা কুঁড়ি। তবু কিছু ঠিকানায় পৌছাতে পারলেই উপশম মিলবে এমনটা মনে করে বুক পকেটে কিছু রাস্তার নাম জমানো থাকে। মেলে কি উপশম? ঘরে ফেরার মতো কোনো ঘরের পথ কি খুঁজে পাওয়া যায় তারপর? |