Jailkhanar Kobita
সম্পাদনা : অর্জুন গোস্বামী
পৃষ্ঠা : 144
দার্শনিক রুশো এক সময়ে বলেছিলেন— মানুষ জন্মগতভাবেই স্বাধীন তবু তাকে শেকলে বোধে রাখা হয়েছে সর্বত্র। অর্থাৎ এক অর্থে স্বাধীনতার বিপরীত মেরুতে অবস্থান জেলখানার। অথচ মুক্তচিন্তাকে অবরুদ্ধ করা সম্ভব হয় না কোনোদিনই। জেলখানার রাজনৈতিক সাহিত্য চিরকাল মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে স্বাধীনতা ও মুক্তির বার্তাবাহক হিসেবে। কখনও স্লোগান কবিতার হাত ধরেছে নিবিড়ভাবে, কখনও কবিতা তার নিবিড় আত্মীয়ের মতো জায়গা দিয়েছে রাজনীতি, মুক্তি আন্দোলনকে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে জেলে বসে এবং জেল নিয়ে লেখা কবি ও রাজনীতিকদের কবিতার সংকলনই হল ‘জেলখানার কবিতা'। এই সংকলনে স্পেনগৃহযুদ্ধে স্পেনের কারাগারে নিহত মিগুয়েল হারনান ডেজের উদ্দেশে পাবলো নেরুদার কবিতা থেকে শুরু করে ভিয়েতনামের হো চি মিন, চিনের মাও-সে তুং, তুরস্কের নাজিম হিকমত সমেত, প্যালেস্তাইন, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বাংলাদেশের (সাবেকপূর্ব পাকিস্তান) বিভিন্ন কবিদের জেলে বসে লেখা কবিতাও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নামগুলি হল দক্ষিণ আফ্রিকার ডেভিড ইভানস্ প্যালেস্তাইনের মহম্মদ দারবশী ও তওফিক জায়াদ। বাংলাদেশের সত্যেন সেন, গাজিউল হক এবং গুয়েতেমালার কৰি অৰ্টো রেনে কাইয়ো অনিবার্যভাবেই এসেছেন সংকলনে। আল মাহমুদ, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সুভাষ মুখোপাধ্যায়, অতীন্দ্র মজুমদার, রাম ধনু, বিমলচন্দ্র ঘোষ প্রমুখের জেলকে নিয়ে কবিতা অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সংকলনটি আরও তাৎপর্যময় হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া নকশালবাড়ি আন্দোলনের সময়ে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলে নিহত হওয়া কবি দ্রোণাচার্য ঘোষ, মুরারি মুখোপাধ্যায়, অমিয় চট্টোপাধ্যায়ের কবিতাও স্থান পেয়েছে। এক কথায় জেলকেন্দ্রিক কবি ও কবিতার যে বিশ্বভুবন তা এই সংকলনের মাধ্যমে বিধৃত হয়েছে।
আকার (cm) : 14.3 (l) X 22.1 (b) X 1.5 (h)