Mao-Er Sesh Nartak লেখক : লি কুনশিন / অনুবাদ : মীনাক্ষী দত্ত পৃষ্ঠা : 77 যে শিশুর বাঁচারই কথা ছিল না। একটি তুচ্ছ ঘটনার হেরফেরে চরম দারিদ্র্য ও ত্রাসের কবল থেকে ভাগ্য তাকে ছোঁ মেরে তুলে এনে দাঁড় করিয়ে দিল বিশ্বজয়ী সাফল্যের সোপানে- ‘মাও-এর শেষ নর্তক’ এক বাস্তবের সিন্ডেরেলার রূপকথা। লি-কুন-সিন-এর জন্ম চিনের করালতম দুর্ভিক্ষের বছর, এক নিরন্ন কৃষক পরিবারে, সাত ছেলের ষষ্ঠ সন্তান, যার মুখে গ্রাস পৌঁছানোর আগেই মায়ের অন্নের থালি শূন্য হয়ে যেত। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬১ সালের সেই দুর্ভিক্ষ চিনের দুই থেকে চার কোটি মানুষ মারা যায়, কিন্তু চেয়ারম্যান মাও-এর সাংস্কৃতিক বিপ্লবের ঢক্কানিনাদ ক্রমেই প্রবল থেকে প্রবলতর হয়। একদিন গ্রামে এল রাজধানী থেকে পরিদর্শ-কেরা। তাদের উদ্দেশ্য সারা চিন উজাড় করে এমন একটি বালক সংগ্রহ করা যাকে রাজধানী বেইজিং-এর নাচের বিদ্যালয়ে লাগাতার তালিম দিয়ে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নর্তকে পরিণত করে শিল্পী-সৃষ্টিতে ও মাও-তত্ত্বের উৎকর্ষ পৃথিবীর সামনে প্রমাণ করা যাবে। লি-কুন-সিন নাচের ‘ন’ জানত না। কিন্তু পরিদর্শকেরা ঘটনাচক্রে ওই লিকেই সুপ্ত নর্তক প্রতিভারূপে মনোনয়ন করল। পরিবারের অনুমতির বালাই ছিল না। লি চালান হল বেইজিং। বছরের পর বছর, রাত্রি-দিন চলল ব্যালে নাচের প্রশিক্ষন। প্রথম-প্রথম সে ছিল এক নিরুৎসাহী গিনিপিগ মাত্র, কিন্তু এক আদর্শবাদী গুরুর প্রেরনায় তার ব্যালে-নাচে আগ্রহ জন্মাল, যদিও রহস্যময়ভাবে সেই গুরুই একদিন অদৃশ্য হয়ে গেলেন। ইতিমধ্যে মার্কিন ও মহাচিনের মধ্যে মৈত্রীচুক্তি হল এবং সৌহার্দ্যের অঙ্গীকার-স্বরূপ আমেরিকায় ব্যালে শিক্ষালাভের জন্য লি পেলেন দুই রাষ্ট্রের প্রথম বিনিময় বৃত্তি। পরবর্তী ঘটনাবলি অনেক কাগজেই শিরোনাম হয়েছে লি কর্তৃক চিনের নাগরিকত্ব ত্যাগ, নৃত্য জগতে সাফল্য ও খ্যাতি, প্রেম, পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলন। কোনো অতিরঞ্জন কী বিষোদ্গার নেই পুরো বইটিতে। একটি জীবনের মধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে একটি মহাদেশ-সদৃশ জাতির ইতিহাস। |